চট্টগ্রামের পটিয়া-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস গতিরোধ করে ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় সেই যুবদল নেতা মামুনকে বহিষ্কার করেছে জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটি। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার পটিয়া পৌর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনর রশিদ মামুনকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতৃবৃন্দের অপকর্মের কোনো দায়-দায়িত্ব দল নেবে না এবং যুবদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সাথে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।
যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা যায়, পটিয়া পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ও তার সহযোগীকে আসামি করে পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী এক স্বর্ণ ব্যাবসায়ী। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল কান্তি দাশ বাদী হয়ে পটিয়া থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, পটিয়া পৌরসভা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মামুন (৩৫) ও তার সহযোগী বিএনপি কর্মী মনির (৩০)।
তাদের দুইজনের বাড়ি পটিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাগজী পাড়া এলাকায়। বহিষ্কৃত মামুন সদ্য বিলুপ্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনামের অনুসারী বলে জানা গেছে।
পটিয়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল দাশের রিদি গোল্ড ফ্যাশন নামের একটি স্বর্ণের দোকান রয়েছে। তাদের দোকানের কারিগর রূপন দাশ গত ২৭ আগস্ট ২১ ক্যারেটের ৬৫ ভরি স্বর্ণ নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাচ্ছিলেন।
দিন দুপুরে গাড়িটি পটিয়া-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া বাইপাস ফারুকী পাড়া পয়েন্ট অতিক্রম করার সময় পূরবী পরিবহনের সামনে একটি মোটরসাইকেল ও একটি নোহা এসে বাসটিকে গতিরোধ করে। এরপর তারা বাসটিতে ওঠেন এবং পেছনের সিটে বসা স্বর্ণ কারিগর রূপন দাশকে ‘ছাত্রলীগ কর্মী’ আখ্যা দিয়ে টেনে হিঁচড়ে ও মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে নেন। তখন বাসটি চলে যায় চট্টগ্রামের দিকে। নামানোর এক পর্যায়ে তারা গলায় ছুরি ধরে রুপনকে মারধর করে তার সাথে থাকা ব্যাগ থেকে ২১ ক্যারেটের ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে যুবদল নেতা মামুন ও তার সহযোগী মনিরকে শনাক্ত করে পটিয়া থানা পুলিশ।
পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রহিম সরকার বলেন, এ ঘটনায় থানায় বুধবার রাতে মামলা করা হয়েছে। এ মামলাটি আমরা গুরত্ব সহকারে তদন্ত করছি। ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।